শনিবার, ২৪ মার্চ, ২০১২

ব্রেইন সার্ভিসিং---!!!



গতকালের পর


বেশি ব্যবহারের ফলে হোক আর ব্যবহার না করার কারণে, ব্রেইনে মাঝেমধ্যে জ্যাম ধরে যায়। কখনো কখনো মনে হয় ব্রেইন বুঝি হ্যাং করেছে! গতকাল আমরা ছিলাম ২০৫৬ সালে। ২০৫৬ থেকে এখন আমরা চলে এসেছি হাল জামানায়।


ব্রেইনের কাজকর্মে গতিশীলতা আনার চিন্তা-ভাবনা থেকেই জাপানে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ব্রেইন সার্ভিসিং ওয়ার্কশপ! (আল্লাহর ওয়াস্তে কেউ আবার আমার কাছে জানতে চাইবেন না ওটা জাপানের কোথায় অবস্থিত? ঐকিক নিয়মের অংকের মতো মনেকরি সূত্রে আগাতে হবে!) ওরা চিন্তা করে দেখেছে ব্রেইনকে মাঝেমধ্যে ওয়াশ ও সার্ভিসিং করা নাহলে ব্রেইনের কর্ম ক্ষমতা হ্রাস পাবে। সেই চিন্তা থেকেই তাদের এই বর্ণালী আয়োজন।


কোনো এক দেশের মাঝারি মানের এক নেতা গেছেন জাপান ভ্রমণে। ঘুরাঘুরির এক পর্যায়ে উনার চোখে পড়লো সার্ভিস সেন্টারটি। যথেষ্ট কৌতূহলি হলেন তিনি। উনার মাথা প্রায়ই ঝিন ঝিন করে! ব্যাথাও থাকে প্রচুর। কখনো কখনো ভোতা ধরণের যন্ত্রণাও হয়! তিনি ভাবলেন এটা বেশি ব্যবহারের কারণেই হয়ে থাকবে। সুযোগ যখন পাওয়া গেছে একটা, কাজে লাগানো দরকার।


তিনি তার ব্রেইনটি সার্ভিসিং এর জন্য দিয়ে দিলেন। ওরা সার্ভিস চার্জ নেয় হান্ড্রেড পার্সেন্ট অগ্রিম পদ্ধতিতে। তিনি চার্য পরিশোধ করলেন। ওয়ার্কশপ কর্তৃপক্ষ উনাকে রিসিট ধরিয়ে দিলো। সাত দিন পর এসে আপনার ব্রেইন নিয়ে যাবেন।


-------------

------------------

সাত দিন পেরিয়ে পনের দিন চলে যাচ্ছে কিন্তু ব্রেইনের মালিক ব্রেইন ফেরত নিতে আসছেন না! কর্তৃপক্ষ কিছুটা চিন্তায় পড়ে গেল। লোকটি কোনো দুর্ঘটনায় পড়ে-টরে গেলো কি না! আবার এমনও তো হতে পারে কোথাও খেই হারিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে! অসম্ভব না, ব্রেইনলেস একটা মানুষ! রিসিট থেকে তারা মানুষটির ফোন নাম্বার বের করে ফোন করলো। ওপাশ থেকে কেউ একজন জানালো উনি বাংলাদেশে চলে গেছেন। কবে ফিরবেন-বলা যাচ্ছে না।


সার্ভিস সেন্টার ভদ্রলোকের মেইল আইডিটি চেয়ে নিয়ে মেইল করলো উনাকে। বলল, জনাব, আপনার ব্রেইনটি সার্ভিসিং করা হয়ে গেছে। এটা এখন একদম ঝকঝকে এবং ফ্রেশ। প্লিজ, নিয়ে যান।


আরো পনের দিন পর অই লোক মেইলের জবাব দিলেন। কী বলেছিলেন তিনি? সেটা আমরা একটু পরে জানবো। তার আগে স্মরণ করি কিছু অমূল্য বাণী। স্মৃতি থেকে লিখছি। শাব্দিক এদিক-উদিক হলে ক্ষমা চাই।




আল্লাহ মাল আল্লায় নিয়া গেছে !----------- সাবেক যোগাযগমন্ত্রী জনাব আলতাফ হোসেন।

শেয়ার বাজারে আছে ফটকাবাজ------------মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত

টাইটানিকও একদা ডুবিয়াছিলো
----------লঞ্চ ডুবিতে স্বজনহারা মানুষকে সাবেক নৌ-মন্ত্রী মরহুম আকবর হুসেন

এদেশের কওমী মাদরাসাগুলো জঙ্গীদের প্রজনন কেন্দ্র
----------- আইনমন্ত্রী ব্যরিস্টার শফিক আহমেদ।

কম খান, দ্রব্যমূল্য কমবে।------------ সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান

ভারত আমাদের যে পরিমাণ পানি দিচ্ছে, তাই তো যথেষ্ট। ----------- পানিমন্ত্রী শ্রী রমেশ চন্দ্রসেন


তিস্তা চুক্তি কবে হবে আমি কী করে বলবো? আমি তো আর গণক নই।
-------------মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপুমণি

আগে জানতাম কুকুর লেজ নাড়ে, এখন দেখছি লেজই কুকুর নাড়ে---------- বিএনপিতে তারেক রহমানের প্রভাব নিয়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী

দেশকে যারা অচল করে দিতে চায়, তাদের বিকল করে দেয়ার জন্য ছাত্রদলই যথেষ্ট।-----------------সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

সরকারের পক্ষে কারো বেডরোম পাহারা দেয়া সম্ভব না।---------------মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

-------- এই মুহুর্তে আর মনে পড়ছে না!!

-----------------
---------------------

পনের দিন পরে অই লোক মেইলের জবাব দিয়েছিলেন। উনি যা বলেছিলেন, বাংলা করলে সেটা অনেকটা এভাবেই দাঁড়ায়-


জনাব, আমি এখন বাংলাদেশে আছি। বেশ আছি। এই অল্প দিনে বিশেষ কারণে এখানকার নাগরিকত্ব পেয়ে গেছি। শুধু তাই না। আপনারা হয়তো বিশ্বাস করতে পারবেন না আমি এখানকার মন্ত্রিত্বের একটি পোষ্টও পেয়ে গেছি। অবাক হবার দরকার নেই। এদেশে তারচে”ও আশ্চর্য ঘটনা ঘটে! আচ্ছা তাহলে, সে অনেক কথা। আপনাদের জেনে কাজ নেই।


এদেশে বেশ আছি আমি। দায়িত্বও পালন করে যাচ্ছি ঠিকটাক। কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আপনারা আমার রেখে আসা ব্রেইন ফেরত আনতে বলছেন তো! থাকুক, আপাতত অটা আপনাদের কাছেই থাকুক। এ দেশে এটার খুব কিছু দরকারও হয় না। অই বস্তু ছাড়াই যে যার কাজ চালিয়ে নিচ্ছে। আমিও। কখনো যখন অন্য দেশে যাবো, অটার প্রয়োজন হবে। তখন নিয়ে নেবো, থ্যাংক ইউ।


------------

---------------

আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে

নেতারচে' যার কাছে নীতি বড় হবে।

শুভ কামনা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন